বাংলাদেশের মধ্যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এক সমৃদ্ধ জনপদের নাম হচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম। এই পার্বত্য চট্টগ্রাম মূলত এই জনপদের তিনটি পার্বত্য জেলাকে নিয়ে গঠিত। বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা। ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস।

এই দিবসটি কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাপি নারীদের মাঝে আত্মোপলব্ধি, অধিকার সচেতনতা এবং নারীর প্রগতির পথে বাঁধাগুলোকে দূর করে, সামগ্রিকভাবে নারীর চলার পথকে আরো সুগম করা এবং এই প্রতিবন্ধকতার সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর ইতিবাচক পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দেশ, সরকারি-বেসরকারি সংস্থা এই দিবসটিকে বেশ গুরুত্বের সাথে উদযাপন করে। এখানে কিছু ছবির মাধ্যমে পাহাড়ে নারীর সংগ্রামী জীবনের কিছু প্রতিচ্ছবি তুলে ধরা হলো। ছবিগুলো সম্প্রতি বান্দরবান পার্বত্য জেলার থানচি উপজেলার বলিপাড়া ইউনিয়ন থেকে তোলা।

নারী অধিকারের কথা আসলে, বেগম রোকেয়ার নারী মুক্তির ভাবনাগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবেই চলে আসে। ১৯৮০ সালে ৯ ডিসেম্বর রংপুরের পায়রাবন্দে জন্ম নেয়া এই মহীয়সী নারী বেগম ১৯ শতকে নারীর অধিকার আদায়ের জন্য বেশ কিছু অনন্য ভাবনা তাঁর কিছু লেখনীর মাধ্যমে প্রকাশ করেছিলেন, আমাদের দেশের অনেক জায়গায়, নারীরা সেই পুরোনো শৃঙ্খল থেকে নিজেকে এখনো মুক্ত করতে পারেনি।

বিশেষ করে পাহাড়ি জনপদে নারীরা খুব পরিশ্রমী। তাঁরা সংসারের জন্য অনেক পরিশ্রম করেন। তবে হতাশার কথা হলো, এতো পরিশ্রম আর ত্যাগ স্বীকার করার পরও, এই জনপদের প্রান্তিক নারীরা তাদের অধিকার সচেতন নয় ও প্রাপ্য অধিকার থেকে অনেক ক্ষেত্রেই বঞ্চিত ও নিগৃহিত হচ্ছেন।

অসচেতন নারীসমাজকে সচেতন করার জন্য বেগম রোকেয়া তাঁর এক লেখায় লিখেছিলেন,
‘ভগিনীগণ! চক্ষু রগড়াইয়া জাগিয়া উঠুন- অগ্রসর হউন! বুক ঠুকিয়া বলো মা! আমরা পশু নই; বলো ভগিনী! আমরা আসবাব নই; বলো কন্যে আমরা জড়োয়া অলঙ্কাররূপে লোহার সিন্ধুকে আবদ্ধ থাকিবার বস্তু নই; সকলে সমস্বরে বলো আমরা মানুষ।’

এই নারী দিবসে সকল নারীকে মানুষ হিসেবে ভাবার ক্ষেত্রে সকলের মানসিক দৈন্যতা দূর হবে বলে আশাকরি, নারীরা আরো অধিকার সচেতন হবেন। এগিয়ে যাবেন বৈষম্যের বেড়াজালকে ভাঙতে। সেই সাথে নারী দিবসে সকল নারীর প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।
লেখক ও ফটো ক্রেডিট :: সুমিত বণিক, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক ।